দেবপ্রিয়া সরকার : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে গোটা দেশজুড়ে বর্তমানে লকডাউন জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আপাতত ১৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত জারি থাকবে এই লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে যাতে কোনরকম জনসংগঠন বা জনজমায়েত না হয় সেই উদ্দেশ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কারণ করোনা ভাইরাস কোনরকম বায়ুবাহিত ভাইরাস নয়। এটি একজনের স্পর্শের মাধ্যমে আরেকজনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়।
দেশের এমন দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারের আদেশ অমান্য করে দিল্লির নিজামুদ্দিন তাবলিগে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেয় প্রচুর মানুষ। সেই জামায়াতে একসাথে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয় করোনা ভাইরাসে। এই মুহূর্তে গোটা দেশে করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে উদ্বেগজনক স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে দিল্লির নিজামুদ্দিন। প্রশাসনের সাহায্যে খালি করে দেওয়া হয়েছে সেই জমায়েত। মঙ্গলবার মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে নিজামুদ্দিনের ওই এলাকার একটি বাড়ি থেকে প্রায় ২৩৬১ জনকে সরিয়ে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। প্রতি বছর মার্চ মাসে দেশ-বিদেশ থেকে ইসলাম সম্প্রদায় প্রচুর মানুষ নিজামুদ্দিন তবলিগে জামাজ ইজতেমার ধর্মীয় সম্মেলনে যোগ দেন। লকডাউনের জেরে সেখানেই আটকে পড়েন তারা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণে তাদের মধ্যে ৬১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের রাখা হয়েছে কোয়ারান্টিনে।
দিল্লির নিজামুদ্দিন তাবলিগ-এর গোটা এলাকা দিল্লি পুরসভার পক্ষ থেকে ভাইরাস সংক্রমণমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্প্রে করা হয়েছে জীবানুনাশক। সরকারের পক্ষ থেকে লোকজন জারি করার পরও এত জনকে একসাথে দেখে হতবাক পুলিশ প্রশাসন। অথচ এর আগে ২৮ শে মার্চ ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য মৌলানা সাদ কে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়। এই ঘটনার পরে তারও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি আর। পুলিশ প্রশাসন তাদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যেভাবে উদ্ধারের কাজ সম্পন্ন করেছে, তাদের এই মহানুভবতা কে টুইট করে কুর্নিশ জানিয়েছেন সিসোদিয়া।