কথায় বলে ‘ভগবান কিছু কেড়ে নিলে অন্য কিছু দিয়ে সেটা পূরণ করে দেয়’। কোনো কাজ যদি মানুষ মনে করে সে করবে তাতে জয়ী হবেই সে। তাকে রোখার ক্ষমতা কারোর নেই। আর ঠিক তাই হলো। যার কাছে পুরো পৃথিবীটা অন্ধকার সেই এবার এক চেষ্টাতেই সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় সফল।
মাত্র সাত বছর বয়স তখনই চারপাশটা অন্ধকার হয়ে যায় ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা তপস্বিনীর। যে বয়সে সকলে খেলে বেড়ায়, লাফিয়ে বেড়ায়, রঙিন দুনিয়া দেখে বেড়ায় ঠিক সেই বয়সেই সবটা অন্ধকার হয়ে যায় তপস্বিনীর। কিন্তু সে ভেঙে পড়েনি সেই এক রত্তি তপস্বিনী আজ যুবতী। তবে, সে সকলের মত দেখতে পায় না চারপাশে সুন্দর দৃশ্য। ছোট থেকেই ক্লাসে প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি তপস্বিনী। তাঁর বাবা সব সময় চাইলেন মেধাবী কন্যার এগিয়ে যাওয়ার পথে কোনও বাধা যেন না হয় তার চোখে দেখতে না পাওয়া।
আর বাবার কথা মত সেই পথেই চলেছে তপস্বিনী। শুধু চলেইনি কাজেও সে করে দেখিয়েছে। ভুবনেশ্বরের উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করছেন সে। এম এ পড়তে পড়তেই প্রথমবারের জন্য বসেছিলেন সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায়। পরীক্ষায় বসেছিলেন জেনারেল ক্যান্ডিডেট হিসেবেই। আর দেখে কে প্রথম চেষ্টাতেই সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় সফল এই তরুণী।মেধাতালিকায় তপস্বিনীর স্থান ১৬১ নম্বরে। পাঁচ লক্ষেরও বেশি ছাত্রছাত্রী বসেছিলেন ওড়িশা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের এই পরীক্ষায়। সফল ২১৮ জন।
তবে, এখানেই থেমে যেতে চান না তপস্বিনী। তাঁর আদর্শ দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন আইএএস অফিসার প্রাঞ্জল পাতিল। তাঁর স্বপ্ন ইউপিএসসি-তে সাফল্য। বলে রাখি, ২০১৮ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল প্রাঞ্জল এখন তিরুঅনন্তপুরমের সাব কালেক্টর। তপস্বিনীর কথায়,এটা তার স্বপ্নপূরণ। ওড়িশা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসে না হলেও তিনি হয়তো শুল্ক ও রাজস্ব বিভাগে যোগ দেবেন। মেয়ের স্বপ্ন পূর্ণ করতে বরাবর পাশে ছিলেন তার বাবা অরুণকুমার দাস এবং মা কৃষ্ণপ্রিয়া মহান্তি। পরবর্তী কলেও মেয়ের পাশেই থাকবেন তারা।