জীবন সায়াহ্নে এসে, এতবছর সংসারের সমস্ত দ্বায়িত্ব পালন করে প্রত্যেক মানুষের একটা বন্ধু চাই যে তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট করবে। একাকীত্ব নিসঙ্গতা কাটাবে বন্ধুর মতো। কিন্তু যাদের স্ত্রী বা স্বামী বিয়োগ হয়েছেন তাদের মানসিক একাকীত্ব ঘিরে ধরলে সেই সমস্যা নিয়ে কেউ গ্রাহ্য করেনা। আর তার সঙ্গে আছে সমাজের কুমন্তব্য। কিন্তু এই সমস্ত কিছুকে উপেক্ষা করে নিজের ভাবনাকে প্রাধান্য দিলেন এক 74 বছরের বৃদ্ধ।
স্ত্রী ছেড়ে চলে গিয়েছে পরলোকে, নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত মেয়েরাও বৃদ্ধ বাবার খোঁজ নিতে ফোন ভরসা। এই পরিস্থিতিতে একাকীত্ব যেন প্রতিদিনই ঘিরে ধরেছিল শুদ্রু রায়ের জীবনকে। তাই একাকীত্ব কাটাতে নিজেকে ভালো রাখতে সমাজের সমালোচনা কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন বছর 74 এর এই বৃদ্ধ।
ঘটনাটি জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির হেলাপাকুড়ি এলাকার। সেখানে চারের বাড়ির বাসিন্দা শুদ্রু রায়। প্রায় বছর দশেক আগেই আগে তার স্ত্রী মারা যান। তারপর থেকে সংসারের হাল ধরেন একাই, ধীরে ধীরে তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় আর তারপর একা হয়ে যান তিনি।
এর পরই হঠাৎ করে বছর ৪২ এর এক মহিলার সাথে আলাপ হয় তার। মহিলাটি পাশের গ্রামেরই বাসিন্দা, তারও ১৭ বছরে বিয়ে হয়েছিল কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই স্বামী বিয়োগ তারপর থেকে তিনি একাই রয়েছেন। আস্তে আস্তে বুধেবালা ও শুদ্রুর মধ্যে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। দুজন একা মানুষ কাছাকাছি চলে আসে। দু’বছর পর তাদের মনে বিয়ের ভাবনা এলেও “সমাজ কি বলবে” এই ভয়েই আটকে ছিলেন। এরপর তার এক প্রতিবেশী উমেশ রায়ের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। মহিলার বাড়িতে রাজি হলেও ও বৃদ্ধের তিন মেয়ে এই বিয়েতে আপত্তি করেন। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটুট থেকেই বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেন।
সম্প্রতি বুধবার সামাজিক রীতি মেনে বিয়ে হয় শুদ্রু ও বুধেবালার। কিছুজন যেমন সমালোচনা করেছেন আবার কিছুজনের বাহবা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে নিজেদের মতো করে সুখে দিন কাটাচ্ছেন নবদম্পতি।