প্রায় সম্পূর্ণ বিনা পুঁজিতে, শৈল্পিক কাজে মিলতে পারে জীবন-জীবিকার সুলুক সন্ধান, জানালেন শিল্পী অরিন্দম দেব
চাকরির ফাঁকে ফাঁকেই প্রায় দেড়শ ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ অবৈতনিক ভাবে কাজ শেখাতে শুরু করলেন।
মলয় দে নদীয়া:- কৃষ্ণনগর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগর সীমান্ত পল্লীর বাসিন্দা অরিন্দম দেব পেশায় রেলকর্মী হলেও, ছোটবেলা থেকে গাছের পড়ে থাকা ডাল, মাটির দলা কে রুপ দিতেন বিভিন্ন আকৃতির। আর এরকম করে অজান্তেই কবে হয়ে উঠেছেন শিল্পী। চিত্রশিল্পী রবিন মন্ডল এর ছবি তাকে অনুপ্রাণিত করতো, তাঁর ছবির মূর্তিতে রূপ দান করতেন তিনি।
চাকরির ফাঁকে ফাঁকেই প্রায় দেড়শ ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ অবৈতনিক ভাবে কাজ শেখাতে শুরু করলেন। প্রায়সম্পূর্ণ বিনা খরচের শিল্পকর্ম যা সম্মানের সাথে উপার্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ পথ। জেলাব্যাপী তার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে, মাজদিয়ার দেবাশীষ ,দোগাছির গৌরাঙ্গ, কৃষ্ণনগরের চয়ন আজ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য ভাস্কর্য নির্মাণের ব্যস্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন, উদ্বোধন করেছিলেন দেড়শ টি ট্রেন যার মধ্যে অধিকাংশই কৃষ্ণনগরের অরিন্দম বাবুর চিত্র এবং সামগ্রিক সজ্জায় সুসজ্জিত ছিলো।
ওল্ড দীঘায় বিশ্ব বাংলা পার্কের হ্যারি পটার সহ বিভিন্ন মূর্তি তার হাতেই তৈরি, এমনকি সিএম গেস্ট হাউজের বিশ্ব বাংলা লোগো তিনিই বানিয়েছেন। কলকাতা বেহালা কৃষ্ণনগর ব্যারাকপুর যাদবপুর সহ একাধিক বিখ্যাত দুর্গা পূজো বারোয়ারী গুলির সেরা পুরষ্কার প্রাপ্তিযোগ হয় তারই শিল্পকর্মে। কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় মণ্ডপসজ্জাতে তার তৈরি অসাধারণ শিব মন্দিরের টেরাকোটার কাজ মুগ্ধ করেছিলো দর্শনার্থীদের।
অরিন্দম বাবু জানান ” শিল্পের প্রতি আগ্রহ থাকলে, দৈনন্দিন প্রয়োজনে ব্যবহৃত ফেলে দেওয়া জিনিস থেকেও অসাধারন শিল্পকর্ম থেকে অনায়াসে রোজগার হতে পারে। অস্ত্রোপচারের ব্যবহৃত বাতিল উপকরণ, এবং খানিকটা মাটি এবং রং দিয়ে তৈরি হতে পারে বহুমূল্য স্থাপত্য ভাস্কর্য।” পেশার কারণে সময় না দিতে পারার জন্য অরিন্দম বাবুর স্ত্রী বিপাশা দেবী কৃষ্ণনগর স্টেশন সংলগ্ন অ্যাপ্রোচ রোডে “ভূমি” নামে একটি ওয়ার্কসপ এবং প্রদর্শনী শালা নির্মাণ করেছেন স্বামীর প্রতিভাকে ত্বরান্বিত করতে।