করোনা সংক্রমণ রুখতে সেই মার্চ মাস থেকে বন্ধ সমস্ত স্কুল কলেজ। চলতি মাসে তো খুলছে না, আগামী মাসেও স্কুল খোলা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে কেন্দ্র। স্কুল না খুললেও পড়ুয়ারা যাতে পড়াশুনার মধ্যে থাকে তাই অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ তার ব্যতিক্রম নয়। এই রাজ্যেও করোনা সংক্রমণের দিকটি মাথায় রেখে স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিকের কয়েকটি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
তবে আগামী ৫ ই সেপ্টেম্বর থেকে সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে স্কুল খোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এরমধ্যেই বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের একটি স্কুলে গত সোমবার ক্লাস করলো দশম শ্রেণীর পড়ুয়ারা। এই খবর পাওয়া মাত্রই স্কুল শিক্ষাদপ্তর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেছে।
এই করোনা আবহে দেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তার মধ্যে স্কুলের তালা খুলে ক্লাস করিয়ে দাসপুরের হাটসরবেড়িয়া বিধানচন্দ্র রায় হাই স্কুল এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। স্কুল খুলে দশম শ্রেণীর ক্লাস হয় সোমবার। পড়ুয়ারা সামাজিক দূরত্ব মেনে, মাস্ক পরেই ক্লাস করেছে এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস করালেন। কিন্তু সরকারের অনুমতি ছাড়া, সব বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করে কেন স্কুলের তালা খুলে ক্লাস করানো হলো? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছে, স্কুল খোলা নিয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবকরা অনেকদিন ধরেই তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল। তাই পরিচালন কমিটি স্কুল খুলে দশম শ্রেণীর পড়ুয়াদের ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
তারপর সোমবার স্কুলের তালা খুলে দশম শ্রেণীর পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া হয়। এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই স্কুল কর্তৃপক্ষ বিতর্কের মুখে পড়ে এবং রাজ্যের শিক্ষাদপ্তরে খবর পৌঁছতেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শোকজ চিঠি পাঠিয়েছে। আজ শোকজের জবার দেওয়ার কথা। এছাড়া স্কুল ইন্সপেক্টরকেও তলব করা হয়েছে। কিন্তু সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, স্কুল ইন্সপেক্টরের বক্তব্য, তিনি এই সম্পর্কে কিছু জানতেন না। এদিকে এই মহামারীর সময় সন্তানদের সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে কেনো এমন সিদ্ধান্ত নিলেন অভিভাবকরা, সেই নিয়ে শিক্ষাবিদ থেকে চিকিৎসক, সকলেই প্রশ্ন তুলছেন।