সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু তদন্তে নেমে মাদকচক্রের হদিস পায় তদন্তকারীরা। আর তারপরেই নিয়মিত মাদক নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে। বর্তমানে বাইকুলা জেলেই রয়েছে অভিনেত্রী। আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে রিয়াকে। আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছে অভিনেত্রী।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ৮১ দিন পর এনসিবির জেরার মুখে সব শিকার করে সুশান্ত বান্ধবী রিয়া। ড্রাগ ও নিয়মিত মাদক সেবন করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় রিয়া চক্রবর্তীকে। মঙ্গলবার ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষ হওয়ার পর আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতেই রিয়াকে থাকার নির্দেশ আদালতের। রিয়া গ্রেফতারির পর দুবার জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর মঙ্গলবার সেই জেল মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায়, নতুন করে আদালতে আবেদন জানিয়েছিল এনসিবি। আর তাতেই আদালত আরও ১৪ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করে। এইসবের মাঝেই রিয়া ও শৌভিকের আইনজীবী সতীশ মানশিন্দে বম্বে হাইকোর্টে দুই অভিযুক্ত ভাই-বোনের জামিনের আর্জি পেশ করেন। আজ আদালতে এই মামলার শুনানির দিন নির্দিষ্ট থাকলেও সেসব ভন্ডুল করে দিল বৃষ্টি। এদিন আদালতের কাজ বাতিল হওয়ায় এই মামলার শুনানি হবে আগামিকাল। এরই মাঝে এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে রিয়া।
এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে রিয়া তার জামিনের আর্জিতে জানায়- ‘এখন সুশান্ত বেঁচে থাকলে তার বিরুদ্ধে উঠতো ড্রাগ সেবনের অভিযোগ। এক বছরের সাজা হত সুশান্তের। সেটি জামিনযোগ্য অপরাধ। আর
সুশান্ত একা শুধু ড্রাগ সেবন করত না, নিজের স্টাফেদের নির্দেশ দিত ওর জন্য মাদক সংগ্রহ করবার’। রিয়ার আরও অভিযোগ, ‘সুশান্ত সিং রাজপুত নিজের আশেপাশের মানুষদের ফায়দা তুলেছে খুব দুর্ভাগ্যের এটা। ওর অনান্য হাউজ স্টাফেদের সঙ্গে ওর নিজের ড্রাগের অভ্যাসকে চালিয়ে যেতে আমাকে, আমার ভাইকে ব্যবহার করেছে’। রিয়ার আরও দাবি ‘সুশান্তের রাঁধুনি নীরজকে ও ওর জন্য মৃত্যুর তিনদিন আগে একটি বক্সের মধ্যে নিষিদ্ধ মাদক ভরে বেডরুমে রেখে দিতে বলেছিল। সেটি মৃত্যুর পর ফাঁকা অবস্থায় উদ্ধার হয় এটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে সুশান্তই শুধু ড্রাগ সেবন করত। বুদ্ধির সঙ্গে এই চক্রে জড়িত থাকার কোনওরকম ইলেকট্রনিক এভিডেন্স রাখেনি নিজের’।
গত ১৪ ই জুন দিনটি আঁধার নেমে এসেছিল সকলের কাছে। কারণ ওদিন সকলে জানতে পারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলিউড হার্টথ্রব সুশান্ত সিং রাজপুত। সুশান্তের মৃত্যুর পরই তোলপাড় হয়ে যায় সিনে দুনিয়া। এর পরেই সুশান্ত মৃত্যুরহস্য ভেদে তদন্তে নামে সিবিআই। তদন্তে নেমে এক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকেই খুলে যায় সমস্ত রহস্য। সেই চ্যাট থেকেই নিষিদ্ধ মাদক পাচার চক্রের হদিশ পায় ইডি। সেই সমস্ত চ্যাটে মারিজুয়ানা, এমডিএমএ, সিবিডি ওয়ালের মতো বিভিন্ন নিষিদ্ধ মাদকের নাম উল্লেখ ছিল। আর সেই চ্যাট গুলি বিনিময় হয়েছিল রিয়া চক্রবর্তী, সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা, জয়া সাহা, ও গোয়ার হোটেল ব্যবসায়ী গৌরব আচার্যর মধ্যে। সেই অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদের পর মাদক সেবন ও পাচারের অভিযোগে রিয়া চক্রবর্তীর ভাই সৌভিককে গ্রেফতার করে এনসিবি। এরপর সুশান্ত সিং রাজপুতের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে আটক করে ইডি। আর এরপরেই রিয়াকেও গ্রেফতার করা হয়। ইতিমধ্যেই এনসিবির জেরার মুখে বলিউডে একাধিক তারকার নাম নিয়েছে যারা মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত।
সূত্রের খবর, মাদক চক্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে রিয়া চক্রবর্তী সারা আলি খান, অভিনেত্রী রকুল প্রীত সিংয়ের দিল বেচারা’র পরিচালক মুকেশ ছাবড়া ও সুশান্তের পুরোনো ম্যানেজার ও বন্ধু রোহিনী আইয়ার নাম নিয়েছে। বর্তমানে সেই তালিকায় নাম জড়িয়েছে দীপিকা পাড়ুকোনেরও। মঙ্গলবার দীপিকার ম্যানেজার করিশ্মা প্রকাশকে জেরা করে এনসিবি বলে খবর।