দেশনিউজ

অস্বাভাবিক ঘটনা! ১৩ মাসে ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা, বলছে সরকারি নথি

বিহারের এমন একটি অস্বাভাবিক ঘটনা আছে, যা শুনলে আপনারা চমকে যাবেন। বিহারের সরকারি এক রেকর্ড থেকে জানা গেছে, এক মহিলা ১৩ মাসের মধ্যে ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

প্রতিদিন নানা অস্বাভাবিক ঘটনার খবর আমাদের কাছে আসে। বিহারের এমন একটি অস্বাভাবিক ঘটনা আছে, যা শুনলে আপনারা চমকে যাবেন। বিহারের সরকারি এক রেকর্ড থেকে জানা গেছে, এক মহিলা ১৩ মাসের মধ্যে ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সরকারি রিপোর্টে এরম জানানো হলেও এটা যে বাস্তবে সম্ভব নয় সেটা সকলেই বুঝতে পেরেছেন। আসলে এরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই ঘটনার পরখ করতে গিয়ে বিহারে এক কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে এসেছে। ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন বা রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বাস্থ্য যোজনাতে(NRHM) হয়েছে বড়সড় কেলেঙ্কারি। এই যোজনার আওতায় বরাদ্দ টাকা তুলতে বিহারের সরকারি রেকর্ডে একজন ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে ১৩ মাসের মধ্যে ৮ বার গর্ভবতী দেখানো হয়েছে। প্রতিটি ডেলিভারির পর সন্তানের মাকে সরকারের পক্ষ থেকে ১,৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ এই মহিলার ক্ষেত্রে ৮ বার দেওয়া হয়েছে।

অথচ ওই সময়ের মধ্যে বিহারের মুজফ্ফরপুরের শান্তি দেবী ৮ সন্তানের জন্ম দেওয়া তো দূরের কথা, ওই সময়ে তিনি একটি সন্তানও প্রসব করেনি। কিন্তু ওই বৃদ্ধা ১৩ মাসের মধ্যে ৮ বার সন্তান প্রসব করিয়েছে দেখিয়ে ১,৪০০ টাকা করে রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বাস্থ্য যোজনা থেকে ৮ বার টাকা তোলা হয়েছে। এইভাবে রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বাস্থ্য যোজনা তহবিলের টাকা যে আত্মসাত্‍‌ করা হয়েছে, তা তদন্তে ধরা পড়েছে। জানা গেছে, এই আত্মসাৎ করা টাকার এক টাকাও পাননি শান্তি দেবী। তার নাম ব্যবহার করে ৮ বার টাকা তোলা হয়েছে সেই বিষয় বহুদিন তার অজানা ছিল।

এই ঘটনার তদন্ত করে জানা গেছে, বিগত ২০ বছরের মধ্যে ওই ৬৫ বছরের বৃদ্ধা কোনও সন্তানের জন্ম দেননি। শান্তি দেবীর ছোট ছেলের বর্তমান বয়স ২০। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের আগস্টের মধ্যে NRHM আওতায় তাকে ১,৪০০ টাকা করে ৮ বার দেওয়া হয়েছে, এই বিষয়টি ওই বৃদ্ধা ঘূনাক্ষরেও টের পায়নি। প্রত্যেক বারই শান্তি দেবীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পর কেউ না কেউ তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। বিষয়টি যখন তার নজরে আসে তখন ওই বৃদ্ধার পরিবার বিষয়টি ব্যাংকে জানান।

পাবলিক হেলথ সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার উপেন্দ্র চৌধুরিকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। তিনি বলেন, যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত করণিক তিনি এখন ছুটির মধ্যে আছেন। তাই এই বিষয়ে কিছু জানানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সিভিস সার্জন ডাক্তার এসপি সিং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, এই যোজনার টাকা যে বা যারা আত্মসাত্‍‌ করেছেন, সেই সমস্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে তারা তদন্ত করবে। বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে কেলেঙ্কারি তদন্ত করতে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি পুরো ঘটনা তদন্ত করবে এবং দোষীদের কঠিন শাস্তি হবে।

Related Articles