নদীয়া সংবাদনিউজরাজ্য

নদীয়ার শান্তিপুরে রাস উৎসবে ঐতিহ্যপূর্ণ বেলোয়ারী ঝাড়ের আলোতে সেজে উঠেছে কৃষ্ণের রথ

বেলোয়ারীর ঝাড়, ফানুসের আলোয় রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি এক অসাধারণ মাত্রা পায়। পূর্বে প্রায় ৩০০ উপরে এ ধরনের কাঁচের বেলোয়ারি থাকলেও বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ৫০ টিতে।

Advertisement
Advertisement

মলয় দে নদীয়া :- শান্তিপুরের রাসযাত্রায় এই পুরনো ঐতিহ্য আজও বর্তমান। আনুমানিক অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔপনিবেশিক ইংরেজদের সাথে তৎকালীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন মুঘল সম্রাটদের হৃদ্রতার সুবাদে ইংল্যান্ড, ইতালি ,বেলজিয়াম ভেনিস যাওয়ার সৌভাগ্য হত মাঝেমাঝেই। সেখান থেকেই ইংরেজদের অনুকরনে বেলোয়ারি ঝাড়বাতি, ফানুসের মোটো নানান আলোকসজ্জা নিজেদের প্রাসাদ দরবার নাচঘর সুসজ্জিত করতেন।

তার পরবর্তীকালে এ বাংলার ক্ষেত্রে ওয়ারেন হেস্টিংস জমিদারি প্রথা চালু করার পর জায়গীরদার জমিদার রায়বাহাদুর খেতাব প্রণয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন রায়বাহাদুর রাজা বাহাদুররা এমনকি জমিদাররাও তাদের খুশি করার জন্য নিজেদের রাজপ্রাসাদে এ ধরনের আলোকসজ্জা ব্যবহার করতেন। মন্দির মসজিদ বা গির্জা সর্বত্রই আলোর বিষয়ে ছিলেন এক।

প্রজারা অবশ্য রেড়ি, সর্ষের নারকোল তেলের প্রদীপ, পরবর্তীতে মৌচাকের মোম, তারও পরবর্তীতে কেরোসিন প্যারাফিন নানান উপকরণেরর আলো ব্যবহার করতেন। তবে ঠাকুরবাড়ির ক্ষেত্রে রেড়ির তেল, মোম, কার্বাইড গ্যাসের আলো ব্যবহৃত হতো। যুগে যুগে পাল্টেছে আলোর উপকরণ, তবে আজও এই সমস্ত আলোর ঐতিহ্যের সমস্ত উপকরণ ধরে রেখেছে শান্তিপুরের বিভিন্ন বিগ্রহ বাড়ি। একমাত্র ভাঙ্গা রাসের শোভাযাত্রায়, বা রঠাকুরী বাড়িতে বহু স্মৃতির আবেগবিজড়িত মনোরম দৃশ্য দেখতে হাজির হন অনেকেই। শান্তিপুরের মঠবাড়ী রাধারমন জিউ তে এই পুজোর তিন দিন সন্ধ্যার পর থেকে বৈদ্যুতিক কোনো আলো ব্যবহৃত হয় না.

বেলোয়ারীর ঝাড়, ফানুসের আলোয় রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি এক অসাধারণ মাত্রা পায়। পূর্বে প্রায় ৩০০ উপরে এ ধরনের কাঁচের বেলোয়ারি থাকলেও বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ৫০ টিতে। অত্যন্ত পাতলা এই কাছের পাত্রের সম্পূর্ণ মাঝখানে বসাতে হয় মোমবাতি, এই বসানোর ক্ষেত্রে অসতর্ক হলে কাঁচ ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, বর্তমানে চিনা টুনি এলইডি র যুগে এ ধরনের বেলোয়ারি অর্থ থাকলেই পাওয়া যাবে এমন কথা জোর দিয়ে বলা যায়না।

তবে শান্তিপুরের মদন গোপাল , গোকুল চাঁদ, দিনদয়ায়াল, বাশবুনিয়া, বড় গোস্বামী, চাঁকফেরা, আতাবুনিয়া গোস্বামী, আশা নন্দবাড়ী, পাগলা গোস্বামী, সহ একাধিক বিগ্রহ বাড়িতে এ বছরও ধোয়া মোছা চলছে আজ সন্ধ্যার পর থেকে আলোকিত করার জন্য।

Related Articles