বারাকপুর: করোনা পরিস্থিতিতে ক্রমাগত অমানবিকতার নজির গড়ছে শহরতলীর বিভিন্ন ঘটনা। কখনো রাস্তায় পড়ে থাকছে করোনা রোগীর মৃতদেহ আবার কখনো অ্যাম্বুলেন্সে পড়ে মৃত্যু হচ্ছে অন্য কোনো রোগীর। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে। আর এবার টানা ২৪ ঘন্টা ধরে করোনা সন্দেহে ইছাপুর মাঝের পাড়া এলাকায় রাস্তায় পড়ে সত্তরোর্ধ অসুস্থ এক রিক্সা চালক। সাহায্যে এগিয়ে আসে না কেউ। অবশেষে দেবদূত হয়ে সাহায্যের হাত ইছাপুরের যুবকের।
অভিযোগ উঠেছে, অসুস্থ হয়ে বহুক্ষণ ধরে রাস্তায় পড়ে সত্তরোর্ধ অসুস্থ ওই রিক্সা চালক। সঙ্গে জলের বোতল থাকলেও অসুস্থতা জেরে জল টুকু পর্যন্ত খাওয়ার ক্ষমতা ছিল না ওই পৌড়ের। কিন্তু ওই পৌড় করোনা আক্রান্ত কিনা সে আতঙ্কে সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে যায়নি তার দিকে। বরং কেউ কেউ তাকে দেখে নাক সিঁটকে চলে যাচ্ছে। তবুও ফিরে তাকাচ্ছে না। দীর্ঘক্ষন রাস্তায় পড়ে থাকার পর খবর দেওয়া হয় নোয়াপাড়া থানার পুলিশকে।
ঘটনাস্থলে নোয়াপাড়া থানার পুলিশ পৌঁছে ওই বৃদ্ধকে জল দেওয়ার চেষ্টা করার সময় সেখান থেকে যাচ্ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কলকাতা হেড কোয়ার্টারের ক্লার্ক পদে কর্মরত ইছাপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন মজুমদার। রাস্তায় পড়ে থাকা ওই বৃদ্ধকে নিজেই কোলে তুলে নিয়ে অসুস্থ রিক্সা চালককে জল খাইয়ে কিছুটা সুস্থ করে তোলেন।এরপর নোয়াপাড়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় উত্তর বারাকপুর পুরসভার উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়। আপাতত চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই বৃদ্ধ। এখানে বলে রাখি, যখন সুমন মজুমদার ওই বৃদ্ধকে সাহায্য করতে এসেছিলেন তখন গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন। তার স্ত্রীকে অটোতে বসিয়ে ওই বৃদ্ধকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে ওই যুবক।
এই প্রসঙ্গে সুমন বলেন, কে সাহায্য করল, কে সাহায্য করল না, তা ভেবে লাভ কি! আমি যতটা পারলাম, চেষ্টা করেছি। আশা করছি উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। এভাবে মৃত্যু পথ যাত্রী অসুস্থ ব্যাক্তিকে রাস্তায় ফেলে চলে যাওয়াটা অন্যায়। আমার স্ত্রী অসুস্থ, তবে এই বৃদ্ধকে আগে হাসপাতাল পাঠানোর দরকার ছিল। যারা করোনা নিয়ে ভয়ে এগিয়ে আসেনি, তাদের কিছু বলার নেই’।