আন্তর্জাতিকনিউজ

রক্ষক‌ই ভক্ষক! হিন্দু নাবালিকাকে অপহরণের পর ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করল পুলিশ!

Advertisement
Advertisement

করোনা এখনও পুরোপুরি বিদায় নেয়নি, বিশ্বের বেশীরভাগ জায়গায় করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু এই আবহের মধ্যেও পাকিস্তানে থামছে না হিন্দু নির্যাতন। এই ঘটনার জেরে আবার শিরোনামে উঠে এলো সেই সিন্ধ প্রদেশ। অভিযোগ করা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক হিন্দু নাবালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে করে এক পুলিশকর্মী। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণেও বাধ্য করা হয়।

সূত্রে জানা গিয়েছে, সিন্ধ প্রদেশের নৌশাহর ফিরোজ জেলায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই নাবালিকা সেখানের বাসিন্দা রমেশ লালের কন্যা নীনা কুমারী। তাকে অপহরণ করে গুলাম মারুফ কাদরি নামের এক পুলিশকর্মী। যদিও জঙ্গি ও মৌলবাদীদের হাত থেকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষা করার জন্যই সেখানে কাদরিকে মোতায়েন করা হয়েছিল, আর তিনিই রক্ষক থেকে ভক্ষক হয়ে উঠলেন। এই ঘটনার রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের মধ্যে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় হিন্দু নেতা বলেন, দিন পাঁচেক আগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় নীনা। বহু সন্ধান চালিয়ে তাঁর পরিবার অপহরণের কথা জানতে পারে। ‘অল পাকিস্তান হিন্দু পঞ্চায়েত’-এর অভিযোগ অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ নিনাকে অপহরণ করে স্থানীয় দরগায় যায় ওই পুলিশকর্মী। প্রথমে সেখানে ওই হিন্দু নাবালিকাকে ধর্মান্তকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাধ্য করা হয়। এরপর তাকে করাচিতে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে করে গুলাম মারুফ কাদরি।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানে হিন্দুদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে একটি চিঠি পাঠান ‘হিন্দু ফোরাম অফ ব্রিটেন’। এই ফোরামের ছত্রছায়ায় সংযুক্ত রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ হিন্দু সংগঠনও। চিঠিতে লেখা হয়েছিল, “পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু নাগরিকরা খুব সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। নানা অন্যায় – অত্যাচার – অবিচারের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। ক্রমে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এই অবস্থা থেকে হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য যাতে দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই দাবী জানাচ্ছি।”

জনসনের কাছে হিন্দু সংগঠনগুলির আরও আবেদন, অবিলম্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি কমিটি গঠন করে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে তদন্ত করতে হবে। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে নিয়ে একইভাবে তদন্তের দাবি তুলেছেন সংগঠনগুলির কর্তারাও। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, যেভাবেই হোক গণহত্যা, অত্যাচার-অবিচার থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা উচিত। অন্যদিকে, রক্ষাসংগঠনের সদস্যরা অভিযোগ করছেন পাকিস্তানের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। যদিও তাঁরা নির্দিষ্ট করে কোনও নাম উল্লেখ করেননি, তবে বরিস জনসনকে লেখা চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, জনমানসে হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করতে পাকিস্তানের কিছু প্রভাবশালী মানুষ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

Related Articles