দেবপ্রিয়া সরকার : দেশের এমন দুর্যোগ সময়ে যখন প্রতিটি মানুষের উচিত প্রত্যেকের পাশে এসে দাঁড়ানোর ঠিক সেই সময় সাধারণ মানুষের বিপদের সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু মানুষ। সারাদেশ জুড়ে যখন লকডাউন চলছে তখন মোটা টাকার বিনিময়ে যাত্রী পরিবহন চালাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক ও যাত্রী বিরুদ্ধে। অ্যাম্বুলেন্স হুটার বাজিয়ে দিব্যি রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলছে যাত্রী পারাপার।
এমনই এক অ্যাম্বুলেন্স আটক করেছে বর্ধমান পুলিশ। লকডাউন অমান্য করে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে যাত্রী পারাপার করছিল সেই অ্যাম্বুলেন্স। হাতেনাতে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সের চালকসহ যাত্রীদের। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে জানা যায় কিছুদিন ধরেই বেশ মোটা টাকার বিনিময় চলছে এই কারবার। লকডাউনের জেরে সমস্ত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বন্ধ শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া। এছাড়া জরুরী কালীন অবস্থায় একমাত্র বেরোচ্ছে গাড়ি। সেই সুযোগটিকে কাজে লাগায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক। রোগী পরিবহনের নামে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে যাত্রী পরিবহন করছেন এবং তার বিনিময় নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এতদিন ভালোই চলছিল এই ব্যবসা। দূর থেকে পুলিশ দেখলে সুস্থ মানুষকে বেডে শুয়ে অসুস্থ সাজিয়ে এতদিন পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়েছে সেই অ্যাম্বুলেন্স চালক।
এদিন অ্যাম্বুল্যান্সটি বর্ধমানের তেলিপুকুর, উল্লাস মোড় থেকে যাত্রী তুলে কাটোয়ার দিকে যাচ্ছে বলে খবর পায় পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ জি টি রোডে বীরহাটা মোড়ে অ্যাম্বুল্যান্সটিকে আটকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি দ্রুত গতিতে সেই এলাকা পেরিয়ে যায়। বীরহাটা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে খবর যায় কার্জন গেটে। সেখানে দল বেঁধে কার্জন গেটের পথ আটকে দাঁড়ায় পুলিশ। অবশেষে দাঁড়াতে বাধ্য হয় অ্যাম্বুল্যান্সটি। অ্যাম্বুলেন্সে চালকসহ মোট ৮ জন ছিল। অ্যাম্বুলেন্সটি আটক করার পর চালক বলে নার্সিংহোম থেকে রোগীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এম্বুলেন্সে থাকা বাকিরা কারা এবং রোগী কোথায় বসবে এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্স চালক। এর পরেই চালক ও যাত্রীসহ অ্যাম্বুলেন্স আটক করে পুলিশ। অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও যাত্রীদের পরিচয় তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও তাঁরা কোথায় যাচ্ছিল? এবং কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল? সেই নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।