করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে দু’মাসেরও বেশি লকডাউন চলায় দেশের অর্থনৈতিক হাল বেহাল অবস্থায় দাঁড়িয়ে। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে খারাপ অবস্থায় পড়েছে দেশের দিন আনা দিন খাওয়া শ্রেণীর মানুষ। ছোট বড় শিল্প, কলকারখানা, নির্মাণ কাজ সব বন্ধ থাকায় তাদের রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর ফলে সমাজের এক শ্রেণীর মানুষের হাতে অর্থ একেবারে নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতি বিচার করে বিভিন্ন অর্থনৈতিকবিদ কেন্দ্রীয় সরকারকে গরিবদের হাতে কিছু নগদ অর্থ তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কেন্দ্রও এই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
এই চিন্তা কার্যকর হলে জানা গিয়েছে ভিন রাজ্যে কাজ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে কিছু পরিমাণ নগদ অর্থ তুলে দেবে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক একটি বিবৃতিতে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সরকারি অন্দরমহলে পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা চলছে। তবে এর জন্য নগদ এর ঘাটতি মেটাতে অর্থনীতিবিদরা কেন্দ্রীয় সরকারকে যে টাকা ছাপানোর পরামর্শ দিয়েছিল তা নিয়ে কোনো রকম চিন্তাভাবনা করেনি কেন্দ্র সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন দুর্দশা নিয়ে কেন্দ্রকে বিরোধীদল। সেই আক্রমণে এড়াতেই কেন্দ্র সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে বলে মনে করছে অধিকাংশ রাজনীতিবিদরা।
গত তিন মাস দেশের সেভাবে কোন আর্থিক উপার্জন হয়নি বললেই চলে। COVID-19 এর কারণে দেশের শেয়ার-বাজারের অবস্থাও বেহাল। বেসরকারি বিনিয়োগ একেবারে নেই বললেই চলে। ডিজিপি সরকারি তথ্য জানা গিয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ধীরগতিতে থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিকবিদরা একটি সমীক্ষা করে জানিয়েছেন, আগামী বছর মার্চ মাসের শেষে দেশের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২.১ শতাংশে গিয়ে ঠেকতে পারে। লকডাউন চলায় বেশ কয়েকটি সংস্থা কর্মীদের বেতন ছাঁটাই এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগেই। এর ফলে বহু মানুষ অসহায় হয়ে পথে বসেছে। তারা কিভাবে রোজগার, করবে কিভাবে দিন চালাবে, সে সম্পর্কে তারা আর কোন পথ খুঁজে পাচ্ছে না। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমিক নামে একটি সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসে সারা দেশে প্রায় ১২.২ কোটি কর্মীকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে কিছু নগদের যোগান দিলে দেশের অর্থনৈতিক চাকা আবার সচল হতে পারে বলে মনে করছে অধিকাংশ অর্থনীতিবিদরা।