ভালোবাসা মানে সুখে দুখে একসঙ্গে থাকা, কোনো পরিস্থতিতে মুখ ফিরিয়ে না নেওয়ার অঙ্গীকার। এখনো যে এরকম নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আছে তারই প্রমাণ মিলল আরেকবার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রীর জন্য ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন এক ব্যক্তি। একটানা 2740 কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে জীবন-মরনের সন্ধিক্ষণে থাকা স্ত্রীকে বাঁচিয়ে দিলেন আহমেদবাদের এক ব্যক্তি।
একটি দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী মিসবাহ খারাওয়ালা শরীরের 70 ভাগ পুড়ে যায় তারমধ্যে তিনি আবার কোভিড আক্রান্ত। ডাক্তার এক বাক্যে জানিয়ে দেন তার স্ত্রীকে বাঁচাতে হলে ত্বকের গ্রাফটিং করতে হবে। অথচ গুজরাটে কোন স্ক্রিন ব্যাংক নেই সবচেয়ে কাছের যে স্কিন ব্যাংকটি বেগমের, কর্নাটক থেকে 1370 কিলোমিটার দুরে, যাতায়াত দ্বিগুন পথ। কিন্তু স্ত্রীকে সুস্থ করতে দাঁতে দাঁত চেপে কষ্ট সহ্য করে লকডাউনের মধ্যে রুদ্ধশ্বাসে পাড়ি দেন ফয়জল খারাওয়ালা।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় তার বাচার আশাও ক্ষীন বলে উদ্বিগ্ন ছিলেন ডাক্তাররা। কিন্তু ডাক্তারদের বিস্মিত করে মিসবাহের সেপসিস শুরু হওয়ার আগেই তাকে সুস্থ করে ফিরিয়ে আনেন জামালপুরের ফয়জল খারাওয়ালা। মিসবাহ ভারতে প্রথম করোনা রোগী যিনি এমন বীভৎস ভাবে আগুনে পুড়েছেন।
9 মে ছিল রমজান, পরিবারের সকলের জন্য এগিয়ে দুর্ঘটনাবশত গায়ে আগুন ধরে যায় মিসবাহের এবং 70 শতাংশ পুড়ে যায়। সেই অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলে জামালপুরে বাড়ি শুনে কেউ ভর্তি নিয়ে রাজি হয়নি। কারন জামালপুর করোনার হটস্পট। শেষ পর্যন্ত এলজি হাসপাতালে বেড পাওয়া গেলেও মিসবাহের করোনা পজেটিভ ধরা পড়লে সিফট করে দেওয়া হয় এসভিপি হাসপাতালে।
এই হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের দুই চিকিত্সক তার দ্বায়িত্ব নেন। 13 মে করোনা মুক্তের পর স্কিন গ্রাফ্টের প্রস্তুতি শুরু হয়। লকডাউন এ কোল্ড চেন কুরিয়ার বন্ধ থাকায় 15 ই জুন তার স্বামী রওনা দিয়ে 17 ই জুন স্কিন নিয়ে ফিরে আসেন। 17 জুন তার প্রথম সার্জারি হয় এবং অটোগ্রাফ্ট এর সাথে হোমোগ্রাফ্ট করা হয়। 8 জুলাই আরো একটি অটোগ্রাফ করতে হয়।এরপর সুস্থ হয়ে মঙ্গলবার তিনি ছাড়া পান।