লকডাউনের মাঝে মানবিকতার নজির গড়লো ভারতীয় রেল!

দেবপ্রিয়া সরকার : করোনা ভাইরাসের জেরে সারা দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে সন্তানের খাদ্য যোগান নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মুম্বাইয়ের এক বাসিন্দা রেণু কুমারী। ভদ্রমহিলার সন্তানের ছাগল, গরু, মহিষের দুধে অ্যালার্জি আছে। তিনি কোথাও পাচ্ছেন না উটের দুধ। ওই মহিলা ট্যুইটে ছেলের উটের দুধের অভাবে সমস্যায় পড়ার কথা ট্যুইট করে ট্যাগ করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তিনি টুইটে লিখেছিলেন, “স্যার, আমার সাড়ে তিন বছরের ছেলে অটিজম নানা ধরনের ফুড অ্যালার্জিতে ভুগছে। ও বেঁচে আছে শুধুমাত্র উটের দুধ এবং সামান্য কিছু ডালের ওপর। লকডাউন শুরুর সময় আমার কাছে বেশিদিন চালানোর মতো উটের দুধ ছিল না। আমায় সাদরি থেকে উটের দুধ বা তার পাউডারের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করুন।”
এই টুইটে বিভিন্ন মানুষ ও বোথরা বিভিন্ন প্রস্তাব এবং পরামর্শ দেন। বোথরা যোগাযোগ করেন দেশের উটের দুধ থেকে তৈরি পণ্যের প্রথম ব্র্যান্ড দেশের উটের দুধ থেকে তৈরি পণ্যের প্রথম ব্র্যান্ড অদ্ভিক ফুডসের সঙ্গে। তারা বাচ্চাটির জন্যই উটের দুধের পাউডার পাঠাতে রাজি হয় কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় মুম্বইয়ে পাঠানোর ব্যাপারটাই। ওই মহিলার টুইট প্রধানমন্ত্রীর চোখে পড়তে তিনি সাড়া দেন ওই টুইটে। প্রধানমন্ত্রী নিজে মুম্বাইতে উটের দুধ পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেন। প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেন, “গতকাল রাতে ২০ লিটার উটের দুধ ট্রেনে মুম্বই পৌঁছেছে। পরিবারটি তার কিছুটা শহরের আরেক অভাবী ব্যক্তির সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। এই সহায়তার জন্য উত্তর-পশ্চিম রেলওয়ের সিপিটিএম শ্রী তরুণ জৈনকে ধন্যবাদ।”
Final update
20 lts. camel milk reached Mumbai by train last night. The family has kindly shared part of it with another needy person in the city.
Thanking Sh.Tarun Jain, CPTM, North-West Railways who ensured an unscheduled halt to pick the container.@RailwaySeva@RailMinIndia https://t.co/fCxI6EJTrX
— Arun Bothra ?? (@arunbothra) April 11, 2020
দুধের কন্টেনারটা নেওয়ার জন্য যাতে ট্রেনটা নির্ধারিত রুটিনের বাইরে গিয়ে থামে সেটিও সুনিশ্চিত করেছেন তিনি। উত্তর-পশ্চিম রেলওয়ের চিফ প্যাসেঞ্জার ট্র্যাফিক শ্রী তরুণ জৈন জানান, ‘বোথরা বিষয়টা ট্যুইট করায় আমাদের গোচরে আসে। এই বিষয়টি নিয়ে আমি আজমেঢ়ের সিনিয়র ডিসিএম মহেশচাঁদ জেওয়ালিয়ার সঙ্গে কথা বলি। এরপর আমরা ঠিক করি লুধিয়ানা আর মুম্বইয়ের মধ্যে চলাচলকারী পার্সেল কার্গো ট্রেন ০০৯০২কে রাজস্থানের ফালনা স্টেশনে দাঁড় করানো হবে। যদিও ওই ট্রেনটির সেখানে থামার কথা নয়। ফালনা থেকে দুধের কন্টেনার সংগ্রহ করে মুম্বইয়ের ওই মহিলাকে পাঠানো হবে।’
এরপর শীর্ষ কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিয়ে ট্রেনটি থামানো হয় বান্দ্রায়। সেখান থেকে উটের দুধ সংগ্রহ করে সরবরাহ করা হয় ওই মহিলাকে। এই বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,’এই বিপদের দিনে যেভাবে সম্ভব আমাদের উচিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমাদের ট্রেন দেশের ১৮টা জেলার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে। এরমধ্যে বিপদে পড়া মানুষকে সাহায্য করতে যা দরকার আমরা করব।’