লকডাউনের বিধি লঙ্ঘন করে ছাড়, রাজ্যগুলিকে কড়া সতর্ক বার্তা কেন্দ্রের

কোনো রাজ্য যাতে লকডাউনের নিয়ম লঘু না করে তা নিয়ে কড়া নির্দেশ দিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সমগ্র দেশ জুড়ে কেন্দ্র যে লকডাউন জারি করেছে, সেই লকডাউনের নিয়ম হালকা করে দেখতে পারেনা কোনো রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি। কেন্দ্র স্পষ্ট লকডাউন জারি করলেও দেখা গেছে বেশ কিছু রাজ্য তাদের নিজস্ব কার্যক্রমের একটি তালিকা তৈরি করে সেই মতো কাজ করছে। অনেক রাজ্য আজ অর্থাৎ সোমবার থেকে লকডাউনের নিয়ম শিথিল করে দিয়েছে। এই খবর কানে আসতেই রাজ্যগুলিকে কড়া নির্দেশ কেন্দ্রের। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্য গুলোকে বলা হয় যে, তারা কোনোভাবেই কেন্দ্রের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের নিজস্ব কাজকর্ম শুরু করার অনুমতি দিতে পারেনা। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব জানান যে, লকডাউন পরিস্থিতিতে যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে দেশ তা সামাল দিতে কেবলমাত্র কেন্দ্রের পক্ষ থেকে লকডাউন সংক্রান্ত নির্দেশিকাতে যে ধরণের কাজকর্ম শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ছাড়া অন্য কাজকর্ম চালুর নির্দেশ দেওয়ার অধিকার নেই রাজ্যের।
স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা চিঠিতে লেখেন, “লক্ষ্য করা গেছে যে কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বিপর্যয় মোকাবিলার আইন ২০০৫ এর অধীনে MD-এর দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী অনুমতি দেওয়া হয়নি এমন কাজও শুরু করার অনুমতি দিয়ে নির্দেশ জারি করছে। তাই আমি আবারও আপনাদের সংশোধিত লকডাউন গাইডলাইন মেনে চলার জন্যে অনুরোধ জানাচ্ছি এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে বলবো যে কঠোরভাবে এই লকডাউনের নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিন”। গত সপ্তাহে দ্বিতীয় পর্যায়ে লকডাউন জারি করার সময় প্রধানমন্ত্রী নিজেই ইঙ্গিত দেন যে ২০ এপ্রিল থেকে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত অনুযায়ী সেইমতো একটি গাইডলাইনও প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই গাইডলাইনে বলা হয়, আজ অর্থাৎ ২০ এপ্রিল থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে আইটি, ই-কমার্স ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিবহণের ক্ষেত্রে। এছাড়া ছাড় থাকছে কৃষিকাজ ও কৃষি বিপণন এবং তার সঙ্গে জড়িত থাকা অন্যান্য কাজ। নির্দিষ্ট কিছু শিল্প ও ডিজিটাল অর্থনীতিতেও সার দেওয়া হচ্ছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সাধারণ পণ্য দুটির ক্ষেত্রেই পরিবহণে মিলবে ছাড়। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান যেমন- মাছ, দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য, হাঁস-মুরগি পরিবহণ ও বিক্রিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। চা ও কফির উৎপাদন ,সরবরাহ এর পাশাপাশি রবার বাগানের কাজকেও লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, গ্রামাঞ্চলে রাস্তা, সেচ প্রকল্প, ভবন, শিল্প প্রকল্প নির্মাণের কাজেও মিলবে ছাড়। কয়লা ও খনিজ উৎপাদনে ক্ষেত্রেও ছাড় থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ডেটা ও কল সেন্টার গুলিও খোলা রাখা যাবে।
এইসব কর্মক্ষেত্র ছাড় পাওয়া গেলেও লকডাউনের নিয়ম অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করতে হবে। তবে পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বিমান, রেল ও সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বড় শিল্প এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমগুলোও। এছাড়াও জন্য জমায়েত স্থানগুলি যথা- সিনেমা হল, থিয়েটার, শপিং কমপ্লেক্সগুলোও পুরোপুরি বন্ধ রাখার নির্দেশ কেন্দ্র সরকারের। সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও।