করোনা প্রতিরোধে ভেষজ ওষুধের সন্ধান দিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী! জেনেনিন

দেবপ্রিয়া সরকার : গোটা বিশ্বে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কবলে। এই ভাইরাস প্রতিরোধে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এই মারণ রোগ করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় বের করতে নাজেহাল দেশের সমস্ত তাবড় তাবড় চিকিৎসক বিজ্ঞানীরা। হাতের কাছে যে সমস্ত ওষুধ আছে তা দিয়েই রোগের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। সারাবিশ্বে বর্তমানে করোনাভাইরাসে ৫১ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এরমধ্যে ইতালিতে ১৩ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে এই করোনা ভাইরাস। আমেরিকা, ব্রিটেন, স্পেন, ইতালি এসব বড় বড় দেশগুলি কাবু হয়ে পড়েছে এই ভাইরাসের কাছে। ইতিমধ্যে স্পেনে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছুঁই ছুঁই করছে।
এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে কথা বললেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। তাঁর মতে ভেষজই পারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে দূরে রাখতে। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ জটিল রোগের চিকিৎসার একমাত্র উপায় ছিল ভেষজ উপাদান। ভারতীয় উপমহাদেশ, চিন-সহ বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ এখনও ভেষজ চিকিৎসায় আস্থা রাখেন। ভেষজ চিকিৎসার প্রধান উপাদান হলো ত্রিফলা। এর সাথে অন্যান্য উপাদান গুলি হল আমলকি, হরিতকি ও বহেড়ার সমাহার। বাঙালি বিজ্ঞানীর রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায় এমনটাই দাবি করেছেন যে, এই ভেষজ দাওয়াই ঠেকাতে পারে করোনার সংক্রমণ। ভারতীয় বাঙালি গবেষক-অধ্যাপক রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায়, তিনি বোস ইনস্টিটিউটের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে কাজ করছেন। এই গবেষকই অতীতে জানিয়েছিলেন ক্যানসার নিরাময়ের আমলকি, হরিতকি, বহেড়া, খয়ের, বিলিতি আমড়া, কুলত্থ কলাই এবং অনন্তমূলের ভেষজ প্রয়োগের কথা।
এই কথা ২০১৬ সালে রাজাগোপাল ও তাঁর ছাত্রী ইন্দ্রাণী করের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উল্লেখ রয়েছে। ভেষজ উপাদান করোনার প্রতিরোধ করতে সক্ষম কি-না এই প্রশ্নের উত্তরে রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায় জানান, যে কোনও জীবাণু তার জিনগত বৈশিষ্ট্য বহন করে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড, ডিএনএ অথবা রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড, আরএনএ রূপে। করোনা হল আরএনএ ভাইরাস যার মিউটেশনের হার অত্যন্ত বেশি। সে ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের বিস্তার কমাতে রোধ করতে হবে আরএনএ’র সিন্থেথিস। ত্রিফলা-সহ ভারতীয় ভেষজ উদ্ভিদের উপাদান একমাত্র এই সিন্থেসিস ঠেকাতে পারবে বলে ধারণা রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায়ের। করোনা ভাইরাসের ওষুধ তৈরি করতে একটি দীর্ঘ পথ অবলম্বন করতে হবে। তাই তার আগে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এই ভেষজ উপাদান গুলি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করেন তিনি।