দেবপ্রিয়া সরকার : চীনের উহান মার্কেট থেকে উৎপত্তি করোনাভাইরাস বর্তমানে সারা বিশ্বে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছেন। চীনে প্রায় ৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছে এই ভাইরাস সংক্রমণে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিমুহূর্তে মিলছে করোনা আক্রান্ত মানুষ। এই রোগ সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন জন সংগঠন প্রতিষ্ঠানগুলি। গত তিন মাসে COVID-19 এর বিস্তার রুখতে সবরকমের চেষ্টা করেছে চিনের প্রশাসন। কিন্তু প্রথমদিকে কোন লাভ হয়নি সেভাবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে চীনের পরিস্থিতি একেবারে অন্যরকম। চীনের সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, গত দুদিন নতুন করে কেউ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়নি। এই বিষয়টিতে হাজার শোকের মধ্যেও নতুন করে আশার আলো দেখছে চিন। শুক্রবার চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন একথাও জানিয়েছে যে বৃহস্পতিবার সেদেশে আরও ৩৯ টি নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে, তবে ওই রোগীরা সবাই বিদেশ থেকে সেদেশে এসেছে বলে খবর। বর্তমানে চিনে করোনা আক্রান্ত বিদেশির সংখ্যা বেড়ে ২২৮ এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে গুয়াংডং প্রদেশে ১৪ জন, সাংহাইয়ে ৮ জন, বেজিংয়ে ৬ জন এবং ফুজিয়ান প্রদেশে ৩ জন করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া চীনের সূত্রের খবর উক্ত দেশগুলি ছাড়াও তিয়ানজিন, লিয়াওনিং, হিলংজিয়াং, ঝিজিয়াং, শানডং, গুয়াংডং, সিজুয়ান ও গানসু প্রদেশে একজন করে বিদেশি COVID-19 সংক্রমণে আক্রান্ত। চীনের সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী বিদেশী ছাড়া নতুন করে গত দুই দিনে কেউ আক্রান্ত হয়নি করোনা ভাইরাসে। বিপদ পুরোপুরি না কাটলেও, অনেকটাই বিপদমুক্ত হয়েছে চীনবাসি।
কিন্তু চীন বিপদমুক্ত হলেও আশঙ্কা কাটেনি কলকাতায়। কলকাতার প্রথম আক্রান্তের অবিবেচক কর্মকাণ্ড নিয়ে যখন ক্ষিপ্ত শহরের জনতা, তার মধ্যে দ্বিতীয় আরেক যুবকের শরীরে পাওয়া গেল করোনা ভাইরাস। প্রথম যুবক লন্ডন থেকে ফেরার পর তাকে কোয়ারেন্টানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই যুবক কোন কিছুকে গ্রাহ্য না করে তার বাবার একাধিক বাথরুম ফিটিংস এর দোকান ও শহরের বড় বড় শপিং মল ও আরো অন্যান্য জায়গায় ঘুরে বেড়ান। ১৩ ই মার্চ সেই যুবক দেশে ফিরলে ১৭ ই মার্চ বেলেঘাটা আইডি তে আইসোলেশন এ ভর্তি হওয়ার আগে পর্যন্ত সারা শহর ঘুরে বেড়ায়য় সে যুবক। বর্তমানে সেই যুবক রয়েছেন বেলেঘাটা আইডিতে ও তার পরিবারের সকলকে রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। অপরদিকে দ্বিতীয় যুবক, শরীর থেকে পাওয়া গিয়েছে করোনাভাইরাস, তার পরিবারের ১১ জনকে পাঠানো হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। দ্বিতীয় যুবক যে অ্যাপার্টমেন্টটিতে থাকে সেটির নাম অভিজাত আবাসনে। বর্তমানে সেই অ্যাপার্টমেন্টের সকলে রয়েছে চরম আতঙ্কে। সেই অ্যাপার্টমেন্টর স্যানিটাইজেশনের কাজে রয়েছে কলকাতা পুরসভা৷
এর আগে ২০০২ সাল থেকে চিনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল সার্স ( সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম)। সেইসময় সার্স ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল আর ৮০৯৮ জন সংক্রামিত হয়েছিল। ২০২০ তে সেই রেকর্ড ভাঙলো করোনা ভাইরাস।