সঙ্গীতা বাগ : “করোনা ভাইরাস”- নাম শুনেই আপমোর জনগণ ভীতসন্ত্রস্ত। ইতিমধ্যেই বেশ ভয় সঞ্চার করে চলেছে এই ভাইরাস সংক্রামিত রোগলক্ষণ। করোনা ভাইরাস ভারতের মাটিতে পা রেখেছে এবং ভারতে এই পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের লিখিত ঘটনার সংখ্যা ছয়। সাধারণ জনগণ সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু করে দিয়েছে মুখোশের ব্যবহার। খবর সূত্রে জানা যায়, আয়ুষ মন্ত্রক প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি এর ট্যুইটার পেজে এক অ্যাডভাইজারি প্রকাশ করেছে ২৯শে জানুয়ারি। এই অ্যাডভাইজারি অনুযায়ী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আটকানোর জন্য এক হোমিওপ্যাথি ওষুধের নাম সাজেস্ট করা হয়েছে। ওষুধটির নাম ‘Arsenicum Album 30’।
এই ওষুধ আপাতত তিনদিন খালি পেটে খাওয়ার কথা পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি সংক্রমণ ঘটে, তার এক মাস পর ফের এই ওষুধ খাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেকের মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এই ধরণের রোগ প্রতিরোধে এই ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।
দেখে নেওয়া যাক, অ্যাডভাইজারিতে প্রকাশিত বিষয়গুলি…..
অ্যাডভাইজারি অনুযায়ী, ২৮শে জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে নিজস্ব বৈজ্ঞানিক পরামর্শক বোর্ডের ৬৪ তম সভায় করোনা ভাইরাস এর প্রকৃতি, তার সংক্রমণের পদ্ধতি এবং সেই সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় বিশদে আলোচনা করে সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি (সিসিআরএইচ)। এই সভায় হওয়া আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছেন যে ‘Arsenicum Album 30’ নামক ওষুধটি করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ রোধ করতে সক্ষম।
অ্যাডভাইজারিতে উল্লিখিত আরো কিছু পরামর্শগুলি হল-
১) যতটা সম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করা
২) হাত বারে বারে ধোওয়া
৩) অপরিষ্কার হাত দিয়ে যেন চোখ, নাক, মুখ চুলকানো না হয়
৪) অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
৫) নিজে অসুস্থ হলে বাড়িতেই থাকা
৬) হাঁচি বা কাশি হলে সেইসময় রুমাল ও টিস্যুর ব্যবহার বাধ্যতামূলক। সাথে হাত ধোওয়া উচিত।
৭) N-95 মাস্ক ব্যবহার করা
৮) যদি নিজে বুঝতে পারেন যে আপনি করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত, তৎক্ষণাৎ মুখোশ পরে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
আয়ুষ মন্ত্রক আরো জানিয়েছেন, পুরোনো দিনের চিকিৎসার মতো বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ যেমন তুলসী, গোলমরিচ, অশ্বত্থ বা বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া টোটকাতে মানুষ উপকৃত হতে পারেন। ইউনানী চিকিৎসা মতে, শরবতউন্নব, তির্যকঅর্বা, তির্যক নাজালা, খামিরা মার্বারিদ জাতীয় ওষুধ রোগীদের উপকার করতে সক্ষম।
তবে বিতর্কমূলক তথ্য এটাই যে, ইতিমধ্যে অল্টনিউজ জানিয়েছে আয়ুষ মন্ত্রক দ্বারা প্রকাশিত এই অ্যাডভাইজারি সঠিক নয়। তাদের উল্লিখিত ‘আর্সেনিকাম অ্যালবাম 30’ ওষুধটি করোনা ভাইরাসের উপর তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব ফেলতে সক্ষম নয়। এমন কোনো গবেষণার কথা কোথাও উল্লেখ নেই যেখানে এই ওষুধ এবং করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ভারত সরকার দেশে উপস্থিত করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, সংক্রমণের গতিবিধি নজরে রেখে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেমন স্বাস্থ্য মন্ত্রক জাপান, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইরান- এই চার দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ করেছে। সেই সঙ্গে ভিসা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চিনের নাগরিকদের ওপর। আর আমাদের দেশের নাগরিকদের বারবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যাতে খুব প্রয়োজন না পরলে এই চারটি দেশে যেন কেউ না যান।