Advertisements

অনাহারে থাকবে না রাজ্যবাসী, খাদ্যের যোগান দিতে নয়া সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের

Advertisements

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশজুড়ে যে লকডাউন চলছে তাতে খাদ্যাভাবে ভুগছেন দেশের এক শ্রেণীর মানুষ। এদেশে দিন আনা দিন খাওয়া শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের যাতে এই লকডাউনে কোনভাবে খাদ্যাভাব না হয় তার জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্তে জানায় আগামী মে মাস থেকে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-২ (RKSY–2)‌তে থাকা প্রাপকরাও ফি মাসে বিনামূল্যে পাঁচ কেজি করে চাল পাবেন। এই রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-১ এ থাকা গ্রাহকদেরও আপাতত গম বাদ রেখে ওই সমপরিমাণ চাল দেওয়া হবে। এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর রাজ্যের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রেশন কার্ড হোল্ডার ও কূপন পাওয়া গ্রাহক মিলিয়ে বাংলার মোট দশ কোটিরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশনের চাল, আটা দেবে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ।

রাজ্য সরকারের এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে গেলে যা সব থেকে বেশি প্রয়োজন তা হলো চাল। সেই চাল জোগাড় করতে আগামী মে মাস থেকে জেলায় জেলায় ধান কেনার ব্যবস্থা শুরু করবে রাজ্য সরকার। লকডাউন এর নিয়ম অর্থাৎ ‘সোশ্যাল ডিসটেন্স’ এর কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার এই ধান কেনাবেচার কাজটি করবে ‘অন্নদাত্রী’ অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের গোলা থেকে এই ধান সংগ্রহ করে নেবে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর। রাজ্য সরকার ধান কিনে নিলে ধানের ক্রয় মূল্যের টাকা আরটিজিএসের মাধ্যমে ঢুকে যাবে কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এই ব্যাপারটি নিয়ে বিভাগীয় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “সবমিলিয়ে আমরা দশ কোটির বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেব। বিপুল চালের জোগানের জন্য মে মাস থেকে অ্যাপের মাধ্যমে জেলায় জেলায় ধান কেনার কাজ শুরু হবে।” এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা যোজনা–১ (RKSY-1) এ কার্ড পিছু প্রাপকরা বিনামূল্যে ২ কেজি করে চাল ও ৩ কেজি করে গম পাচ্ছিলেন। কোনও গ্রাহক গম নিতে না চাইলে তাকে চাল দেওয়া হচ্ছিল। তবে আগামী মে মাস থেকে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার (RKSY-1) ও (RKSY-2) দুই ক্ষেত্রেই পাঁচ কেজি করে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এই পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়ে দেন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের নতুন সচিব পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি। এর আগে রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-২ কার্ডের প্রাপকদের ১৩ টাকা কেজি দরে চাল ও ৯ টাকা কেজি দরে গম দেওয়া হতো।

কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুটি ক্ষেত্রেই গম তুলে দিয়ে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। মে মাস থেকে সেই চাল যোগানের কাজ শুরু হবে। সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে কৃষকদের থেকে ধান কেনার ক্ষেত্রে এতদিন যে ‘ধান দিন চেক নিন’ নামে যে প্রকল্প ছিল আপাতত তা স্থগিত করে সেই আগের পদ্ধতি অর্থাৎ আরটিজিএসের মাধ্যমে কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যখাদ্য সুরক্ষা যোজনা–১ এ ২ কোটি ৬৫ লক্ষ এবং যোজনা–২ এ ১ কোটি ৪৫ লক্ষ প্রাপক রেশন পাচ্ছে। দুটি ক্ষেত্র মিলিয়ে মোট প্রাপকের সংখ্যা ৯ কোটি ৯১ লক্ষ। রেশন কার্ড ছাড়াও আলাদা কূপনের মাধ্যমে রেশন পাচ্ছেন ৬৫ লক্ষ প্রাপক।

Related Articles