সেই প্রাচীনকাল থেকেই স্বামীর মঙ্গল কামনায় হিন্দু বিবাহিত মহিলারা সিঁদুর এবং শাখা পলা ব্যবহার করেন। একজন হিন্দু বিবাহিত মহিলার অবিচ্ছেদ্য অলংকার এগুলি। আর বাঙালির ঐতিহ্য এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে শাখা শিল্প। শুধুই কি স্বামীর মঙ্গল কামনায় এই শাখা ব্যবহার নাকি এর সাথে জড়িত আছে ইতিহাস। চলুন দেখে নেওয়া যাক।
এই শঙ্খ বা শাখা শিল্পের প্রথম উদ্ভব ঘটেছিল 2000 বছর আগে দক্ষিণ ভারতে। বল্লাল সেনের হাত ধরেই দক্ষিণ ভারত থেকে বাংলাদেশের শাখা শিল্পের সূচনা। কিন্তু বিবাহিত মহিলাদের ধর্মীয় রীতিতে কিকরে এই শাখা জায়গা করে নিল?
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান থেকে জানা যায় শঙ্খাসুর নামক এক অত্যাচারী অসুরের উপদ্রবের দেবতারা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। এই শঙ্খাসুরের অত্যাচারের শাস্তি দিতে নারায়ণ তাকে বধ করেন। অপরদিকে আবার শঙ্খাসুরের স্ত্রী তুলসী দেবী ছিলেন নারায়ণের একনিষ্ঠ ভক্ত। স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে তুলসী দেবী তখন নারায়নকেই স্মরণ করতে থাকেন, স্বামীর অমরত্বের প্রার্থনা করতে থাকেন। নারায়ন তার প্রতি সন্তুষ্ট হলে তুলসী দেবী ও শঙ্খাসুরের দেহাংশ থেকে শাখার সৃষ্টি করেন। এরপর থেকেই বিবাহিত সম্পর্কের মাঙ্গলিক চিহ্ন হিসেবে শাখা এক জায়গা করে নিয়েছে।
তবে ইতিহাস অন্য কথা বলছে। এক ব্রিটিশ লেখক এর লেখা থেকে জানা যায় বল্লাল সেন এর সাথে দক্ষিণ ভারত থেকে বাংলাদেশে শাঁখারিরা এসেছিলেন। অর্থাৎ 900 বছর আগেও শাখার প্রচলন ছিল। আবার ঐতিহাসিকদের মতে বল্লাল সেনেরও আগে থেকেই শঙ্খশিল্পের বিপ্লব ঘটে। তখন থেকেই অলঙ্কার হিসাবে স্থান করে নিয়েছিল শাখা। তবে তার সাথে কোনো ধর্মীয় রীতিনীতি জড়িয়ে আছে কিনা এই নিয়ে মতানৈক্য বর্তমান।