বিনোদন

চুপিসারে বোনের বিয়েতে কলকাতায় রোহমান-সুস্মিতা সেন, ভাইরাল বিয়ের ছবি

Advertisement
Advertisement

বোনের বিয়েতেই প্রেমিক রোহমান শলকে বাঙালি বিয়ের হাতেখড়ি দিলেন সুস্মিতা সেন। তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে গেলেন বিয়েবাড়ির পিঁড়ি ধরা থেকে শুরু করে মালাবদল, শুভদৃষ্টি, এমনকি বাসর জাগার ব্যাপারেও। সুস্মিতা প্রেমিক রোহমান শল, দুই মেয়ে রেনি আর আলিশাকে নিয়ে দিন পাঁচেকের জন্য কলকাতার বাড়িতে এসেছিলেন। তবে সেই সফর এতটাই নিঃশব্দ ছিল যে কলকাতায় থেকেছেন, শহরতলির বিয়েবাড়িতে গিয়ে গিয়ে স্টারডম ঝেড়ে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন আর পাঁচটা হুল্লোড়ে বাঙালি মেয়ের মতো, কিন্তু টের পায়নি কাকপক্ষীও। সেজেগুজে কনেযাত্রী যাওয়া, রাস্তার ভাঁড়ের চা থেকে শুরু করে ডায়েট ভুলে চিতল মাছের মুইঠ্যা, রগরগে মটন কষা, পাতুরি, পোলাও, কড়াইশুটির কচুরি কোনওটাই বাদ দেননি তিনি।

এই শীতের প্রথম বিয়ের তারিখ ছিল পয়লা মাঘ। সেই দিনই প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীকে দেখা গেল কোন্নগরের নবগ্রামে এক বিয়েবাড়িতে। বেনারসি সজ্জিতদের পাশে দাঁড়িয়ে এক গাল হেসে ফটোগ্রাফারদের পোজ দিচ্ছেন পাশে প্রেমিক রোহমন শল, দুই মেয়ে, ভাই রাজীব সেন ও তাঁর স্ত্রী হিন্দি টেলিভিশন অভিনেত্রী চারু অসোপা, বাবা সুবীর সেন, মা শুভ্রা সেন সকলেই। মুম্বই থেকে সবাই মিলে এসেছিলেন কোন্নগরে সুস্মিতার জেঠতুতো বোন ঐন্দ্রিলা সেনের বিয়েতে। মেয়ের বাড়ির বদলে কোন্নগরের বাসিন্দা পাত্র সায়ক সেনের বাড়িতেই হয়েছিল বিয়ের সমস্ত আয়োজন। সেখানেই কনেযাত্রী হিসেবে হাজির হয়েছিলেন গোটা সেন পরিবার এমনকী প্রেমিক রোহমন শলও, খাতায় কলমে পরিবারের একজন না হয়েও। নিয়মরক্ষা নয়, বোনের বিয়েতে চুটিয়ে মজা করার পরিকল্পনা নিয়েই এসেছিলেন সুস্মিতা, করেওছেন। দুপুর থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাঁদের বাড়িতে থেকে রীতিমতো হইচই করেছেন দিদি, জানিয়েছেন বোন ঐন্দ্রিলা। পুরোদস্তুর তাল দিয়েছেন হবু জামাইবাবু রোহমান শল-ও। রীতিমতো সাতপাক ঘুরিয়েছেন রোহমান বিয়ের সময় ঐন্দ্রিলার পিঁড়ি ধরে। শুভদৃষ্টির সময় মন্ত্র বুঝতে না পারলেও গোটা ব্যাপারটা বেশ ভাল লাগছে তাঁর, প্রমাণ মেলে রোহমানের মুচকি হাসি থেকে। সুস্মিতার বাবা সুবীর সেন ঐন্দ্রিলার কন্যাদানও করেন।

পেশায় শিক্ষক পাত্রের বাবা দেবজ্যোতি সেন জানিয়েছেন, সুস্মিতা সেনকে এমন চোখের সামনে পেয়ে যেমন আনন্দ হয়েছে, তেমনই সতর্কও থাকতে হয়েছে। তাঁর ছেলে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। তাঁদের অভিজ্ঞতা নেই তারকা সামলানোর। কিন্তু, তাঁরাও মুগ্ধ সুস্মিতার পাশের বাড়ির মেয়ের মতো হাবভাবে। জানালেন, ‘‘সুস্মিতাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কেউ যেন খবর জানতে না পারে। কিন্তু, ছোট শহরে খবর ছড়ায় দ্রুত। ১৫ জানুয়ারি সুস্মিতা যে নবগ্রামে আসছেন, তা দু’দিন আগেই জানাজানি হয়ে যায় এলাকায়।’’ তাঁকে দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে যায় এলাকায় যখন বিয়ের দিন দুপুরে সুস্মিতা দেবজ্যোতিবাবুর বাড়িতে ঢুকছেন। সুস্মিতা কিন্তু নিজের অনুরাগীদের বেশ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই হাত নেড়ে অভিবাদন জানান। এমনকি, বিয়েবাড়িতেও তাঁর সঙ্গে কারোর নিজস্বীর আবদার ফেরাননি সুস্মিতা। দেবজ্যোতিবাবুর কথায়, এরকম মাটির কাছাকাছি থাকতে খুব কমই দেখা যায় তাঁর মতো সেলেব্রিটির।

সুস্মিতা ও তাঁর আত্মীয়দের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, তা নিজে দেখাশোনা নিয়ে দেবজ্যোতি বাবু অভিজ্ঞতার কথা মনে করে বললেন, ‘‘দিনভর মজা করার মেজাজে ছিলেন সুস্মিতারা। আমাকে বলেছিলেন, এখানে এসেছি আনন্দ করতে আর পুরো আনন্দ করেই ফিরব।’’ বিয়ের দিন বিকেলে সুস্মিতার বায়না মেনে শেষে বাইরে থেকে ভাঁড় আনিয়ে তাতে বাড়িতে তৈরি চা ঢেলে পরিবেশন করা হয় সুস্মিতাকে। ‘‘তাই খেয়েই সুস্মিতার সে কি উচ্ছ্বাস!’’ বলছিলেন দেবজ্যোতিবাবু। রাতে খাওয়া-দাওয়ার সময়েও নানান পদের মধ্যে চিতল মাছের পদটি তাঁর এতটাই ভাল লেগেছে যে, মুম্বইয়ে গেলে তাঁকে এই রান্না আবার খাওয়াতে আবদার করেছেন বরকর্তা দেবজ্যোতি বাবুর কাছে। সুস্মিতার জ্যাঠামশাইয়ের পালিত কন্যা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সুস্মিতার সম্পর্ক বরাবরই ভাল। জানালেন, ‘‘বিয়ে করছি জানাতেই দিদি বলেছিল, তারিখটা জানাস, যেখানেই থাকি পৌঁছে যাব।’’ সেই কথা অনুযায়ী পরিবার নিয়ে এসে পড়েছেন, হুগলির কোন্নগরে বোনের বিয়েতে আনন্দ করতে। এমনকি সদলবলে বাসরে থাকার প্রস্তুতি শুরুও করেছিলেন সুস্মিতা, রোহমান, রেনি, আলিশারা। কিন্তু, রাতে হঠাৎই সুস্মিতার মা শুভ্রা সেন অসুস্থ বোধ করায় বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। সুস্মিতার ভ্রাতৃবধূ হিন্দি টিভি অভিনেত্রী চারু অসোপা গোটা দিনের অভিজ্ঞতার ভিডিও রেকর্ডিং করেছেন। ভিডিওর বিবরণে লিখেছেন, শ্বশুরবাড়ির প্রথম বিয়ে, রোহমানেরও সেরকমই। তবে খাতায় কলমে বাঙালি বিয়ের প্রথম পাঠ-ই বলতে হবে তাঁর ক্ষেত্রে।

Web Desk

We belong to that group who are addicted to journalism. Behind us, there is no big business organization to support us. Our pens do not flow under any other’s commands.

Related Articles