দরজায় দরজায় ঘুরেও মেলেনি কোনও কাজ, বহু বঞ্চনা সহ্য করে বলিউডের এভারগ্রীন নায়িকা মাধুরী দীক্ষিত

অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের ফ্যান আট থেকে আশি প্রায় সকলেই। নিজের অভিনয় এবং নাচ দিয়ে নব্বইয়ের দশকের অন্যতম প্রথম সারির নায়িকা হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী। মাধুরীর একটি হাসির ঝলকেই ঘায়েল হয়ে যায় তার লক্ষ লক্ষ অনুরাগী। তবে মাধুরীর অভিনেত্রী হয়ে ওঠার পথটা মোটেই সহজ ছিল না। কারণ তার গায়ে ছিল না কোনো স্টার কিডের তকমা, না ছিলো কোনো পরিচিতি।
১৯৬৭ সালে ১৫ মে মুম্বইয়ে জন্ম হয় মাধুরীর। মাত্র তিন বছর বয়স দিয়েই তালিম নিতে শুরু করেন কত্থক নাচের। জানলে হয়তো অবাক হবেন একজন বাঙালি অভিনেতা সাথেই প্রথম ডেবিউ করেন মাধুরী আর সেই অভিনেতা অন্য কেউ নয়, বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম অভিনেতা তাপস পাল এর বিপরীতে অবোধ ছবির মাধ্যমে সিনেমা জগতে পা রাখেন মাধুরী। তবে পরিচিতি পান তেজাপ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর একের পর এক ব্লকবাস্টার সিনেমায় নিজের অভিনয় প্রতিভা দেখিয়েছেন লাস্যময়ী অভিনেত্রী। দয়াবান, তেজাব, সাজান, কয়লা, দেবদাসের মতো বলিউডের একাধিক জনপ্রিয় সিনেমা রয়েছে মাধুরীর ঝুলিতে। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পেয়েছেন প্রচুর ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।
তবে একটা সময় কাজের জন্য মাধুরীকে ঘুরতে হয়েছিলো দোরে দোরে। কারণ তিনি কোনও স্টারকিডও ছিলেন না, তাঁর ছিল না কোনও ফিল্মি ব্যকগ্রাউন্ড। একটা সময় মাধুরীকে প্রত্যাখ্যান করেছিল দুরদর্শনও। দুরদর্শনের ‘বম্বে মেরি হ্যায়’ নামের একটি সিরিয়ালে অভিনয়ের জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন মাধুরী। তবে তাঁদের মাধুরীর ডকুমেন্টস পছন্দ না হওয়ায় মাধুরীকে তারা রিজেক্ট করে দেন। তবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন অভিনেত্রী সেদিনের রিজেক্ট হওয়া মেয়েটাই আজকের বলিউডের সেরা অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত।
১৯৮৯ সালে ‘ত্রিদেব’ ছবিতে সানির বিপরীতে মাধুরী অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন অনিল কপূরের ম্যানেজার রাকেশ নাথের অনুরোধে। প্রযোজকের অনিচ্ছাতে এই সিনেমায় মাধুরীকে নেওয়া হয়েছিল, যদিও তার আগে মুক্তি পেয়েগেছিল মাধুরী-অনিল কাপুর অভিনীত ‘তেজাব’।
১৯৯৯ সালে ডাক্তার রাম নেনেকে বিয়ে করার পরে বেশ কিছুদিনের জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন নায়িকা। অবসর নিয়েছিল রুপোলি পর্দার থেকে। তবে আবার নিজের জগতে ফিরে এসেছেন তিনি, বহু ছোটবেলা থেকে কত্থক ডান্সে তার তালিম। নিজের প্রত্যেকটি সিনেমাতেও নিজের নাচের ছাপ ফেলেছেন এই মোহময় সুন্দরী। আর তাই সিনেমায় তেমন ভাবে কাজ না করলেও, ডান্স রিয়েলিটি শো গুলিতে মাধুরী বিচারকের ভূমিকায় অতুলনীয়।
আর হবে নাই বা কেন, মাধুরী নিজে একজন পোড়-খাওয়া ডান্সার। নিজের নাচে মুগ্ধ করে দিতে পারেন যেকোনো নৃত্য প্রেমিকে। দেখতে দেখতে অভিনেত্রী পা দিয়েছেন ৫৩ বছর বয়সে তবে বয়স যেন তার কাছে কেবলমাত্র একটি সংখ্যা, আজও একইরকমভাবে নিজের সৌন্দর্য ধরে রেখেছেন মাধুরী। বয়সের ছাপ এতটুকুও পড়েনি মাধুরীর রূপে, বরং দিন প্রতিদিন আরো সুন্দরী হয়ে উঠছেন তিনি।