নদীয়া সংবাদনিউজরাজ্য

নদীয়ার শান্তিপুরে কালীমাতার মন্দিরে লক্ষাধিক টাকার গহনা চুরি, এলাকায় শোকের ছায়া

পুজোর কদিন সোনা, রুপার ভারী ভারী গহনা পরিয়ে রাখা হয় প্রতিমাকে। তার জন্য প্রশাসনিক বিধিব্যবস্থা ও থাকে যথেষ্ট পরিমাণে।

Advertisement
Advertisement

মলয় দে নদীয়া :- ধর্মীয় পূণ্যভূমি নদীয়ার বহু সাবেকি পুজোর পীঠস্থান শান্তিপুর। দুর্গা, লক্ষ্মী,সরস্বতী, রাস, জগদ্ধাত্রী, কালীপুজো কোনটাই বীনা আড়ম্বরে দেখা যায় না। বহুদিন ধরে পুজো করে আসা বিভিন্ন ক্লাব বারোয়ারি বিগ্রহ বাড়িগুলির প্রতিমার অলংকারের প্রাচুর্যও চোখে পড়ার মতো। অনেক পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিবছর একটি করে গহনা নির্মাণ করেন, ভক্তবৃন্দদের মানৎকরা বা দান তো আছেই। পুজোর কদিন সোনা, রুপার ভারী ভারী গহনা পরিয়ে রাখা হয় প্রতিমাকে। তার জন্য প্রশাসনিক বিধিব্যবস্থা ও থাকে যথেষ্ট পরিমাণে।

গতকাল শান্তিপুর শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুত্রাগড় কেবি সাহা রোডে সুতোরপাড়া যুব মুক্তি সংঘের কালিমাতার গায়ের লক্ষাধিক টাকার গহনা চুরি যায়। পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে দুইজন রাত্রি দুটো পর্যন্ত পাহারায় ছিলেন পাশের একটি ঘরে। আজ রবিবার, কাপড়ের হাটে যাওয়ার জন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা ভোর তিনটের সময় থেকেই সজাগ ছিলেন প্রত্যেকে। মাত্র এই ১ ঘন্টার ফাঁক বুঝে প্রতিমার সোনার গলার হার ,টায়রা ,টিকলি, টিপ, মহাদেবের চরণ পদ্মসহ বেশকিছু গহনা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতী।

ভোর পাঁচটার সময় প্রতিমার অগোছালো চুল দেখে সন্দেহ হয় এক এলাকাবাসীর। তারপর এই শোকের ছায়া নেমে আসে সমগ্র সূত্রাগড় অঞ্চলে। তারা প্রশাসনকে জানালে যাবতীয় তথ্য নিয়ে তদন্তের আশ্বাস প্রদান করে চলে যান। প্রশাসনকে ঘিরে এলাকাবাসীর জোরালো দাবি, জগদ্ধাত্রী রাস কালীপুজো নিয়ে দফায় দফায় প্রশাসনিক বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়, সারারাত প্রশাসনিক পেট্রোলিং, গুরুত্বপূর্ণ পুজোমণ্ডপে সিভিক মোতায়েনের। অথচ বাস্তব ক্ষেত্রে শুধু তাদের বারোয়ারি নয় ! পুলিশি পরিষেবা পান না বেশিরভাগ ক্লাববারোয়ারিই।

এমনকি পুজোর আগে দুদিন বা পূজা চলাকালীন তিনদিন প্রশাসনকে দেখতে পান নি তারা। তবে বেশ কয়েক বছর আগে প্রশাসনিক পরিষেবায় সন্তুষ্ট ছিলেন তারা। অন্যদিকে প্রশাসন কেউ বলতে শোনা গেলো মিটিং গুলিতে নিজস্ব প্রশাসনিক সহযোগিতা চাহিদা সম্পর্কে উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জানানো দরকার ছিলো। ওই এলাকার মহিলাদের দাবি জেলা পেরিয়ে পুলিশের কৃতিত্বের কথা শোনেন তারা, গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখলে পুলিশ আসামির সন্ধান পাবে বলেই তাদের বিশ্বাস।

এলাকার প্রবীণরা বলেন, গয়না চুরি যাওয়ার পর প্রশাসন যে পরিমাণে তৎপর হয়, আগে থেকে যদি সামান্যও সচেতন থাকতেন তাহলে হয়তো এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতো না। এর আগেও বিগ্রহ বাড়ি, মন্দির থেকে বেশ কয়েকবার গহনার চুরির লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে শান্তিপুরে। আত্মসমালোচনা করে বলেন অতীতের ঘটনা থেকে আমাদেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিলো, নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরাই রক্ষা করতে মায়ের গহনার সাথে একটি সিসি ক্যামেরা কেনা জরুরি ছিলো।

Related Articles