দেবপ্রিয়া সরকার : দিন দিন যেন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এর সাথে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই ভাইরাসের উপসর্গও খুব অদ্ভুত। একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম ভাবে ধরা দিচ্ছে করোনাভাইরাস। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে দেরি ভাইরাস করে ধরা পড়ায় রোগীকে বাঁচানো দুস্কর হয়ে উঠেছে। এভাবেই মারা গিয়েছে বহু মানুষ। এই ভাইরাস দেহে সংক্রমণ ঘটিয়েছে কিনা এ বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রে রোগী নিজেই বুঝতে পারছে না। কারো কারো দেহে এই ভাইরাসের উপসর্গ মারাত্মকভাবে দেখা দিচ্ছে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে বোঝাই যাচ্ছে না। এনআরএস এ মঙ্গলবার মারা যাওয়া ব্যক্তি, হাওড়া জেলা হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তি এবং হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে মারা যাওয়া বৃদ্ধের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস সংক্রমণ অনেক দেরি করে ধরা পড়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্না গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘করোনা ভাইরাসের উপসর্গ অনেকক্ষেত্রে বোঝা না যাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের ক্ষেত্রে’। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টি লক্ষ্য করে তারা একসাথে করোনা ভাইরাস এর উপসর্গ গুলির একটি তালিকা প্রদান করেছেন। দেখে নিন করোনাভাইরাসের মূল উপসর্গ কি কি ও এইগুলি কিভাবে এক এক করে ধরা দেয়।
১: চিকিৎসক বিশেষজ্ঞদের মতে কোন ভাইরাসের মূল উপসর্গ হচ্ছে জ্বর আসা। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ৮০% এর জ্বর এলেও ২০% এর জ্বর আসেনি। সেই ২০% এর শুধু শ্বাসকষ্ট ও কাশির উপসর্গ লক্ষ্য করা গিয়েছে।
২: করোনা ভাইরাসের অপর একটি উপসর্গ হলো সর্দি হওয়া। কিন্তু অনেকেই জানতে চেয়েছে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলে সেই সর্দি ঠিক কিরকম হবে? অর্থাৎ শুকনো সর্দি নাকি নাক থেকে জল পড়ার মত অবস্থা হবে? এই প্রশ্নের উত্তর চিকিৎসাবিদরা জানিয়েছে, যদি নাক থেকে জল পরার মতো সর্দি দেখা যায় তবে সেটি খুব সাধারন। এতে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু যদি শুকনো সর্দি হয়, অর্থাৎ কফ নেই কিন্তু সর্দির জন্য অস্বস্তি হচ্ছে, গলা ব্যথা ও জ্বালা করছে, তবে সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাস হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
৩: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শুকনো কাশির সমস্যা হবে। অর্থাৎ কাশির সঙ্গে কোনো রকম কফ উঠবে না। যদি সারাদিনে দু-একবার কাশি হয় তবে সেটিকে সাধারন বলেই ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু যদি প্রতিদিনই একটু পরপরই এই শুকনো কাশি হয় তবে করোনা ভাইরাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে একটু ঘরঘরে কাশি হলে সে ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে নিজের সমস্ত জিনিস আলাদা করে হোম কোয়ারান্টিনে থাকলেই ভালো।
৪: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের অনুভূতি হয়। এবং করোনা ভাইরাসের কারণে এই সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা তীব্রভাবে বাড়তে থাকে। অনেক সময় এই শ্লেষ্মাজনিত সমস্যা সিভিয়ার নিউমোনিয়ার দিকে বাঁক নেয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাদ ও গন্ধ পাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এছাড়া নতুন উপসর্গ হিসেবে কোন আক্রান্ত ব্যক্তির ডায়রিয়া হবার সম্ভাবনাও থাকছে প্রচুর। তাই এমন কোন উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।