একটা মানুষ ঠিক কতটা মানুষ তা নির্ভর করে তাঁর মনুষ্যত্ববোধের উপর, সেই মানুষটির ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের উপর নয়। অনেক মানুষ আছেন যারা নিজের স্বল্প রোজগার হওয়া সত্বেও অন্যকে খাইয়ে বাদান করে খুশি হয়। আবার অনেক মানুষ আছে যাদের অনেক থাকা সত্ত্বেও তারা মানুষকে দান করতে চায়না। সেই সকল মানুষকে ঠিক কতটা মানুষ বলা যেতে পারে তা বলাই বাহুল্য। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া একটি ছবি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
ছবিটিতে দেখা গিয়েছে একটি মহিলা নিজে রান্না করে রাস্তার কুকুরদের খাওয়াচ্ছেন। জানা গিয়েছে সেই মহিলাটি চেন্নাইয়ের বাসিন্দা, নাম মিনা, পেশায় রাঁধুনি। নিজের স্বল্প রোজগার হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রতিদিন খেতে দেন রাস্তার কুকুরদের। রাস্তার কুকুরদের প্রতি অগাধ ভালোবাসার সেই দৃশ্য ভাইরাল হতেই নেটিজেনরা সেই মহিলাকে ভালোবাসা ও আশীর্বাদ জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে ওই মহিলা তার পুরো জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে ওই রাস্তার অসহায় পশুদের জন্য। করোনা ভাইরাস এর জেরে দেশজুড়ে লকডাউন চলায় রাস্তার কুকুর-বিড়াল রাও সমস্যায় পড়েছে। যে মানুষগুলো পথে যেতে আসতে রাস্তার কুকুর-বিড়াল দের দিকে এক টুকরো বিস্কুট বা একটু খাবার ছুঁড়ে দিত, লকডাউন চলায় তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই অনাহারেই দিন কাটাচ্ছে রাস্তার কুকুর-বিড়ালরা। সব পথ কুকুরদের সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও, চেন্নাইয়ের ১৩ টি কুকুরের দায়িত্ব নিয়েছে মিনা। শুধু খাওয়ানো না, দিনরাত তাদের যত্ন করার দায়িত্বও নিয়েছে মিনা। মিনা মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে ওই সকল পথ কুকুরদের।
নেটিজেনদের বক্তব্য, এমন মানুষ গুলোর জন্যই হয়তো পৃথিবীতে এখনও মনুষ্যত্ববোধ বেঁচে রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এর আগে অনেক ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গেছে অনেক মানুষ রাস্তার কুকুরদের উপর অত্যাচার করছে, তাদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দিচ্ছে কিংবা তাদের খাবারে বিষ মিশিয়ে তাদের মেরে ফেলছে। এমন অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী বহুবার হয়েছি আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। সেই সকল মানুষদের উদ্দেশ্যে একটাই বক্তব্য, খেতে দিতে না পারলেও মারার অধিকার তাদের নেই। এই পৃথিবীতে বাঁচার অধিকার সকলের সমানভাবে রয়েছে। মিনার মত মানুষ রয়েছে বলেই পৃথিবীতে অবলা জীব গুলো এখনো বেঁচে রয়েছে।