Panta Bhat: তীব্র এই গরমে খাবার যেন খেতেই ইচ্ছে করছে না। বারে বারে গলা শুকিয়ে হয়ে যাচ্ছে কাঠ। আর সে কারণেই জলের গ্লাসে দিতে হচ্ছে চুমুক। এতে অর্ধেক পেট ভরে যাচ্ছে। আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যারা ব্রেকফাস্টে খেয়ে নিচ্ছেন পান্তা ভাত। এতে একদিকে যেমন পেট থাকছে ঠান্ডা ঠিক তেমনই শরীরে মিলছে নানান উপকার। চিকিৎসকেরা বলছেন, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ফলের মতোই পুষ্টিকর গুণে ভরপুর পান্তা ভাত। তবে কেবলমাত্র খেলেই হবে না পাশাপাশি বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। তবেই কিন্তু শরীরে উপকার পাওয়া যাবে।
কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয় বাংলাদেশ এবং ওড়িশাতে ব্যাপক প্রচলন রয়েছে পান্তা ভাতের। এমনকি এটি ওড়িশার ঐতিহ্যবাহী খাবার। উড়িয়া ভাষায় এই খাবারের নাম পোখাল ভাত। সাধারণ ভাত রাতে জলে ভিজিয়ে রেখে দিলেই তা খানিকটা ফুলে ওঠে। এরপর গন্ধরাজ লেবু, কাঁচা সরষের তেল, নুন, কাঁচা লঙ্কা, কাঁচা পেঁয়াজ এবং সুস্বাদু ভাজা দিয়ে এই ভাত খাওয়ার আনন্দটাই আলাদা। ওড়িশাতে আবার এই ভাত খাওয়া হয় দই, বরি ভাজা, আলু সিদ্ধ, আচার ইত্যাদি দিয়ে। বাংলাদেশে শুটকি মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। ওপার বাংলায় রাজকীয় পদ হিসেবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে পান্তা ভাত। এই খাবার ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে খান চেটেপুটে।
পান্তা ভাত খাওয়ার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে থাকে। কাজে বাড়ে এনার্জি। কেবলমাত্র কাঁচা লঙ্কা এবং কাঁচা পেঁয়াজ থাকলেই ভাত খাওয়া হয়ে যায়। থরে থরে ব্যঞ্জনের প্রয়োজন হয় না। তবে স্বাদ কিছুটা বাড়িয়ে তুলতে নানান মানুষ নানান রকম ভাবে খায় এই ভাত। যদিও সেসব নিয়ে খুব একটা বেশি মাথাব্যথা নেই বিশেষজ্ঞদের। তাদের আসল উদ্দেশ্য হল পান্তা ভাতের পুষ্টিগুণ।
২০১৯ সাল থেকে পান্তা ভাত নিয়ে চলছে নানান রকমের পরীক্ষা নিরীক্ষা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পান্তা ভাতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রনের মতো পুষ্টি। আর তাই দিনে অন্তত একবেলা পান্তা ভাত খেলে দেহে পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে সহজেই। এছাড়াও পান্তা ভাত প্রোবায়টিক অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এই গরমে যদি নিয়ম করে পান্তা ভাত খাওয়া হয় তাহলে কমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। এছাড়াও একাধিক রোগের ঝুঁকি কমায় পান্তা ভাত। বজায় থাকে দেহের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য। এমনকি গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর হয়ে যায় সহজেই। তবে ভুল করেও ১২ ঘন্টার বেশি সময় এই ভাত জলে ভিজিয়ে রাখলে চলবে না।